font-help

এই পোস্টটি 2,188 বার দেখা হয়েছে

আদিবাসীদের ঐতিহ্যগত গ্রামীণ সাধারণ বন ব্যবস্থাপনা ও কাপ্র“পাড়া সংরক্ষিত বন। সিংইয়ং ম্রো

দেশের আয়তনে শতকরা ১৭.৪৯ ভাগ বনভূমি রয়েছে। ১৯৭১ সালের পূর্বে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামে কাচালং, বরকল, নাড়াইছড়ি, রাইখ্যং, কাপ্তাই, সাংগু ও মাতামুহুরীর সর্বমোট ১২৯০ বর্গমাইল ভূমিতে তদানিন্তন সরকার কর্তৃক সংরতি বনাঞ্চল গঠন করা হয়। যা মোট পার্বত্য ভূমির প্রায় এক চতুর্থাংশ। স্বাধীনতার পরও আশির দশকে অশ্রেণীভূক্ত ব্যাপক বনাঞ্চল বনায়নের আওতায় নিয়ে আসা হয়। আবার নব্বই দশকে শুরু থেকেই তিন পার্বত্য জেলার ৮০টি মৌজায় সর্বমোট ২,১৮,০০০ একর  ভূমিতে সরকারীভাবে সংরতি বনাঞ্চল গঠনের পরিকল্পনা গৃহীত হয়। ইতোমধ্যে প্রায় ১,৪০,০০০ একর ভূমিকে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সংরতি বনাঞ্চল হিসাবে চুড়ান্ত ঘোষণা দেওয়া হয়।

বান্দরবান পার্বত্য জেলায় মোট অশ্রেণীভূক্ত বনাঞ্চলের পরিমান হল ৭, ২২,০৭১ একর। এর মধ্যে বনবিভাগ বনায়ন করেছে-

১। বান্দরবান বন বিভগ                                 ২৩,৬৮১ একর।

২। পাল্পইড বন বিভাগ বান্দরবান                    ২৬,৯৪২ একর।

৩। লামা বন বিভাগ                         ১৯,১৩৫ একর।

৪। পাল্পউড বন বিভাগ কাপ্তাই                        ১৬,০০০ একর।

৫। ১৫৫ জুমিয়া পরিবারকে পূনর্বাসন    ৭,৭৭৫ একর।

                                           সর্বমোট= ৬,২৮,৫৩৮ একর।

পার্বত্য বনাঞ্চলকে জধরহ ঋড়ৎবংঃ বলা যেতে পারে। মাটি প্রায় সময় স্যাঁত স্যাঁতে থাকত। পশু পাখি, জীব জন্তুর মৃতদেহ পড়ে থাকত। এ অঞ্চলের গাছ পালা সবুজে ঢাকা থাকত। ফলজ ও ঔষধী গাছ পালা ছিল পরিপূর্ণ। উচ্চ উচ্চ বৃরে ডালে নানা ধরণের অর্ডিক শোভা ছিল দৃষ্টি নন্দন। এ বনাঞ্চলের গাছপালাকে চার স্তরে ভাগ করা যায়। একেক স্তরে একেক ধরণের প্রাণী বসবাস করে।

প্রথম স্তরে গাছপালা সব চেয়ে উচ্চ। এগুলো প্রায় ৭০/৭৫ মিটার লম্বা হয়। এদের গুঁড়ি ও আকার বেশ বৃহৎ হয়। এই বৃগুলো সবসময় তীব্র রোদ ও বাতাসে মোকাবেলা করে। এই বৃগুলো ঈগল পাখি, বানর, হনুমান, উল্লুক, বাদুর, ধনেশ পাখি, ভীমরাজ এবং প্রজাপতিরা বসবাস করতে দেখা যায়।

দ্বিতীয় স্তরেরর গাছ পালা ৩০/৩৫ মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ থাকে। এটি এখানকার বনাঞ্চলে সবচাইতে ঘন এবং সবুজ স্তর। উপর থেকে দেখলে মনে হবে সবুজ ছাদ। এই স্তরের গাছগুলো সবচাইতে বেশী সূর্য্যের আলো আর বৃষ্টি পায়। এখানে পশু পাখিদের খাবার যোগার করতে বেশ সুবিধাজনক। তাই এখানে বাসা বাঁধে বিভিন্ন ধরণের পশুপাখি। এ স্তরের  প্রাণীদের মধ্যে রয়েছে কাঠবিড়ালী, ময়না, টিয়া, লেমুর, বানর, বেঙ, সাপ ও নানা প্রাজাতির সরীসৃপ।

তৃতীয় স্তরের জš§ায় কচি গাছ পালা আর লতাগুল্ম। বনের ঘন সবুজ ছাদ ভেদ করে সামান্য কিছু সূর্য্যরে আলো এই স্তরে পৌঁছায়। তবে এখানেও বিভিন্ন ধরণের প্রজাপতি, বেঙ, আর সাপের দেখা মেলে। মাটির সবচাইতে কাছাকাছি অর্থাৎ এ বনের চতুর্থ স্তরের গাছ পালার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফার্ণ, তৃণলতা ও চারা গাছ। বেঁচে থাকার জন্য যাদের খুব অল্প আলোতে প্রয়োজন হয়, শুধু তারাই এখানে জš§ায়। বনের এই স্তরের সূর্য্যরে আলো পৌঁছায় মাত্র ২শতাংশ। মাটি প্রায় সময় থাকে স্যাঁত স্যাঁতে। এই মাটিতে প্রচুর ঝরাপাতা, মরা গাছ পালা, মৃত পশু পাখির দেহ পঁচে থাকে। এগুলো পঁচে মাটিকে উর্বর করে। তাই গাছ পালা দ্রুত বড় হয়ে ওঠে। এই স্তরের প্রাণীদের মধ্যে রয়েছে- বাঘ, ভাল্লুক, হাতি, গয়াল, শুকর, শিয়াল, হরিণ, বনমোরগ, মথুরা, বনরুই বেঙ, সাপ ইত্যাদি। তাছাড়া এই বনে নানা ধরণের জঙ্গলী ফলজ বৃ দেখা যায়। ফলজ বৃরে মধ্যে রয়েছে- ডুমুর, গুডগুটিয়, লক্কন, আমলকি, বহেরা, আমড়া ইত্যাদি।

আবহাওয়া ঃ

এ পাহাড়ী অঞ্চলের উষ্ণ বায়ূ প্রাবাহ নেই এবং বছরের উষ্ণতম সময়ের তীব্র শীতলতা সামুদ্রিক আবহাওয়া দ্বারা প্রশমিত হয়। নভেম্বর হতে ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত পাহাড়ে ঘনকুয়াশা পড়ে। রাতের কুয়াশা কদাচিৎ দিনের মাঝামাঝি সময়ের আগে ছড়ে না। এ কুয়াশায় স্বাস্থ্যের জন্য তি হয় না এবং গোটা বছরের এই চার মাস সময়ই স্বাস্থ্যকর সময়। এখানে ফেব্র“য়ারী মাসে কিছু বৃষ্টিপাত হলেও সে মাসের শেষ সময়ে বা জুন মাসের প্রথমার্ধের পূর্বে বর্ষাকাল শুরু হয় না। আর শুরু হলেও বিরামহীনভাবে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত চলে। বৃষ্টিপাত এখানে খুব বেশী হয় এবং বাৎসরিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় ১২০ ইঞ্চি।

গ্রামীণ সাধারণ বন ব্যবস্থাপনা ঃ

পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় প্রায় প্রতিটি গ্রামের পাশ্ববর্তীস্থানে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বাগান ব্যতিত গহীণ অরণ্য দেখা যায়। যার আয়তন আনুমারিক ৫০ থেকে ১০০ একর। গ্রামবাসী বা এলাকাবাসী সম্মিলিতভাবে এসব বন আদিবাসীরা ঐতিহ্যগতভাবে প্রচলিত প্রথা ও রীতি-নীতির আওতায় সংরণ করে আসছে। তারা এগুলোকে গ্রামীণ সাধারণ বন বলে আখায়িত করে থাকে। এই সংরতি বনের কারণে দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় বসবাসকারী আদিবাসীরা পানীয় জলের উৎস ছড়া ঝরণাগুলো সবল থাকে। জীব বৈচিত্র্য, প্রাকৃতিক পরিবেশ ও বনজ সম্পদ ধ্বংসের মুখেও পার্বত্য আদিবাসীদের ঐতিহ্যগত গ্রামীণ ব্যবস্থাপনা একটি অনন্য দৃষ্টান্ত।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন মৌজায় গ্রামে আদিবাসীদের ঐতিহ্যগত গ্রামীণ বন ব্যবস্থাপনা বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে। কোন কোন মৌজায় হেডম্যান বা কারবারীদের তত্বাবধানে পারিচালিত হয়। আবার কোন কোন মৌজায় একাধিক গ্রাম নিয়ে পরিচালিত হয়। এ গ্রামীণ বন ব্যবস্থপনা পরিচালনের জন্য আদিবাসীরা কিছু নীতিমালা প্রনয়ন করে থাকে।

১। এসব সংরতি বনে জুমচাষ ও বন্যপাণী শিকার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কেউ নিয়ম অমান্য করলে সামাজিকভাবে তাকে বিচারের সম্মুখীন হতে হয়।

২। গ্রামে গরীব, বিধাবা, বিপতœী, প্রতিবন্ধী লোকেরা বন সংরণ কমিটি অনুমতি নিয়ে গৃহনির্মাণ বা মেরামতের জন্য সংরতি বন থেকে গাছ পালা ও বাঁশ আহরণ করতে পরবে।

৩। গ্রামে কোন শিা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ বা মেরামতের জন্য সংরতি বন থেকে গাছ পালা ও বাঁশ আহরণ করতে পারবে।

৪। কেউ মৃত্যুবরণ করলে মৃতদেহ সৎকারের সময় বাঁশ, গাছ পালা আহরণ করতে পারবে। তবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কেউ কাটতে পারবে না।

এই সংরতি বন সরকারীভাবে রেকর্ডভূক্ত না থাকলেও ঐতিহ্যগত অধিকারে সমস্তিগতভাবে মালিকানা স্বীকৃতি আছে। ১৯০০ সালে বৃটিশ সরকার মৌজার হেডম্যানদেরকে এ বিষয়ে মতা দিয়েছে। ১৯০০সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধির-৪১.এ বিধিতে এ সম্পর্কে মৌজার হেডম্যানকে মতা দেওয়া হয়েছে। তা নিম্নরূপ:

(এ) কোন নিবাসীকে গৃহস্থালী কাজ ব্যতিত অন্য কোন কাজে তাঁর মৌজা হতে বাঁশ, কাঠ এবং অন্যান্য বনজ দ্রব্য অন্য কোন মৌজায় এবং অনিবাসী কোন ব্যক্তিকে যে কোন কাজে অনুরূপ কিছু অপসারণ নিষিদ্ধ করতে পারবেন।

(বি) মৌজাস্থ কোন এলাকা বা এলাকাসমূহে বাঁশ, কাঠ বা অন্যান্য বনজ দ্রব্য সংরণের জন্য ঐ এলাকা বা এলাকাসমূহকে জুম চাষের আওতা মুক্ত করা হয়েছে মর্মে ঘোষণা করতে পারবেন।

(সি) হেডম্যান যদি মনে করেন যে, জুম কাটা হলে তাঁর মৌজাস্থ প্রজাদের পরবর্তী বছর সমূহে জুম চাষে সংকট সৃষ্টি হতে পারে তাহলে হেডম্যান নবাগতদের জুম কাটা হতে বিরত রাখতে পারবেন।

(ডি) জুম চাষের জন্য তিকর প্রতীয়মান হলে হেডম্যান তাঁর মৌজায় গবাদি পশু চড়ানো নিষিদ্ধ মর্মে ঘোষণা করতে পারবেন।

আদিবাসীদের সমস্তিগতভাবে বনভূমির উপর ঐতিহ্যগত এই অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছেন ১৯৬৫ সালের তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জনাব এম.এস রহমান। তিনি ১৯৬৫ সালে ৩রা আগষ্ট এ আদেশ জারি করেন। আদেশটি তা নিম্নরূপ ঃ

পূর্ব পাকিস্তান সরকার

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়

পার্বত্য চট্টগ্রাম।

এ বিষয়টি আমার নজরে এসেছে যে, এ জেলার অশ্রেণীভূক্ত বনাঞ্চলে নির্বিচারে গাছ, বাঁশকাটার কারণে মৌজারবাসী গৃহস্থলীর কাজে ব্যবহারের জন্য বনজ সামগ্রী অভাব দেখা দিয়েছে। অতীতে মৌজা এলাকায় মৌজাবাসীর নিজেদের প্রাত্যহিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য হেডম্যানের নিয়ন্ত্রণে একটি ছোট রিজার্ভ ফরেষ্ট রেখে দেয়ার রীতি প্রচলিত ছিল। কিন্তু এ রীতি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে জনগণ ঘর তৈরী এবং গৃহস্থালীর প্রয়োজনে বনজ সামগ্রী সংগ্রহের অসুবিধা সম্মূখীন হচ্ছে। এজন্য প্রত্যেক মৌজার কিছু এলাকাকে সংরতি করে রাখা হলে মৌজাবাসী প্রয়োজন অনুযায়ী হেডম্যানের অনুমতি সাপেে ঐ সংরতি বন থেকে তাদের জরুরী প্রয়োজন মেটাতে পারবে।

এ কারণে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে যে, মৌজা হেডম্যানের নিয়ন্ত্রণে প্রত্যেক মৌজায় একটি সংরতি বন রাখা হবে। এ সংরতি বন থেকে বাঁশ বা গাছ অথবা অন্যান্য বনজ দ্রব্য বিক্রয় করা যাবে না। প্রতি মৌজায় এক বা একাধিক বকে একটি সংরতি বনের আয়তন হবে আনুমানিক ১০০ একর। একাধিক বক বড় বড় পাড়ার আশে পাশে থাকাটা সুবিধাজনক হবে কারণ এতে হেডম্যান স্থানীয় কারবারীদেরকে এগুলো দেখাশুনার দায়িত্ব প্রদান করতে পারবেন। সংরতি বনে অবৈধ্য অনুপ্রবেশ বন্ধ এবং বৃ নিধন রোধসহ বিভিন্ন প্রজাতির বৃরোপন ও হেডম্যানদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

প্রস্তাবিত সংরতি বন সৃষ্টির এলাকা এবং এলাকার পরিমান ও সীমানা চিহ্নিত করে এ সম্পর্কিত বিবরণাদি নিম্নস্বারকারীর নিকট এক মাসের মধ্যে প্রেরণ করার জন্য প্রত্যেক মৌজার হেডম্যানকে অনুরোধ জানানো গেল। যাতে হেডম্যানের অনুমতি সাপেে মৌজাবাসী ব্যতিত ঐ এলাকায় অন্য কেউ যাতে কোন প্রকার গাছ কাটতে না পারে এ সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় নির্দেশ জারী করা যায়।

সংরতি বনে অবৈধ্য অনুপ্রবেশ অথবা বনের তিসাধনকারী ব্যক্তিকে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে এবং এ সম্পর্কিত রিপোর্ট হেডম্যান/কারবারীরা যতশীঘ্র সম্ভব সংশিষ্ট মহকুমা প্রশাসকের নিকট দাখিল করবেন।

এ আদেশ পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধি ধারা ৭ অনুযায়ী জারী করা হল।

মেমো নং- ২৩৮৪ (৪০)

স্বার/এম.এস রহমান

তারিখ ঃ রাঙ্গামাটি ৩রা আগষ্ট ১৯৬৫ ইং

জেলা প্রশাসক

অনুলিপিঃ সকল হেডম্যান।

পার্বত্য চট্টগ্রাম

বনে জীববৈচিত্র সংরক্ষণে আদিবাসীদের প্রথাগত সামাজিক আইন ঃ

বন সংরণে পাশাপাশি আদিবাসীরা তাদের ঐতিহ্যগত রীতি নীতি আওতায় জীববৈচিত্রও সংরণ করে। ম্রো আদিবাসীদের প্রথাগত সামাজিক আইনে আছে-

? কোন জীব জন্তু মিলনরত অবস্থায় শিকার করা নিষেধ;

         গ্রামের সংরতি বনে পশু পাখি শিকার করা নিয়েধ,

         অপর গ্রামের সংরতি বনে পশু পাখি শিকার করা নিষেধ;

         জুমে কোন পশু পাখি বাচ্চা প্রজনন করলে সেসব পশু পাখি বাচ্চা ধরা বা নেওয়া বা মারা সম্পূর্ণরূপে নিষেধ। নিলে বা মারলে বা ধরলে ফসলের চারা অঙ্কুরগমন হবে না তাদের বিশ্বাস।

         যে সব প্রাণী খায় না সেসব প্রাণী অনর্থক হত্যা বা মারা নিষেধ রয়েছে। যেমন: ময়না পাখিকে মারা নিষেধ। মারলে ময়না পাখি অভিসাপে সন্তানহীন হয়ে যাবে। আর ময়না পাখি মাংস খেলে কুষ্ঠরোগ হয় বলে ম্রোদের বিশ্বাস।

         গোষ্ঠীর চিহ্ন এমন জীব জন্তু মারা, ধরা বা খাওয়া ম্রো সমাজে সম্পূর্ণরূপে নিষেধ রয়েছে। ম্রোরা মনে করে তাদের প্রত্যেক গোষ্ঠী কোন না কোন জীব জন্তু উপকার করেছে বা সাহায্য করেছে। যেমন: সাংরু গোষ্ঠী নেতা কোন এক সময় নদীর  পাবন হলে বন্যার পানিতে ভেসে গিয়েছিল তখন কাসিম তাকে বন্যার পানি থেকে উদ্ধার করেছিল বলে তাদের বিশ্বাস। তখন থেকে সাংরু গোষ্ঠীরা কাসিমের মাংস খাওয়া পরিহার করে। কাসিমকে তাদের গোষ্ঠীর প্রতীক বলে মনে কাসিমকে পূজা অর্চণা করে। এভাবে অনেক গোষ্ঠী আছে কেউ ভালুকের মাংস খায়না, কোন কোন গোষ্ঠীর লোক বানরের মাংস খায়, কোন কোন গোষ্ঠীর লোক ঈগল পাখির মাংষ খায় না, কোন কোন গোষ্ঠীর লোক তিলি ঘুঘুর মাংস খায় না।

গ্রামীণ বন ব্যবস্থাপনা গুরুত্ব ও প্রয়োনীয়তা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে রা পাওয়া ঃ

গ্রামের চতুর্পাশ্বে বন থাকলে বনের গাছ পালা থাকার ফলে ঝড় তুফান সহজে আঘাত হানতে পারে না। বনের বৃে বাঁধা প্রাপ্ত হয়ে ঝড়ের গতিবেগ কমে যায়। বাতাসের গতিবেগ সরাসরি গ্রামে গিয়ে আঘাত হানতে পারে না। আদিবাসীরার তাই বংশ পরম্পরায় গ্রাম্য সাধারণ বন সংরণ করে আসছে। দেশে ঘূর্নিঝড় বা প্রবল বর্ষণেও আদিবাসী অধ্যূষিত এলাকায় য়-তির পরিমাণ কম পরিলতি হয়। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে, জুম পোড়ার আগুনেও গ্রামের পাশে বন থাকলে গ্রাম পুড়ে না। বড় বড় গাছে আগুনের কুন্ডলী বাঁধাপ্রাপ্ত হয়ে গ্রামে আসতে পারে না। এই অগ্নি খড়গ থেকে রা করে এক মাত্র এই সংরতি বন। এলেও প্রথমে বনের ঝরাপাতাগুলো পুড়তে ততণে গ্রামবাসীরা সকলে মিলে আগুন নিভিয়ে ফেলে।

পানির উৎস সংরণ ও ব্যবহার ঃ

পাহাড়ীর ঝরণা ও ছড়ার পানির এক মাত্র উৎস হল বন। বন না থাকলে ঝরণা ছড়ার পানি শুকিয়ে যায়। বনে পানির উৎস সৃষ্টির জন্য নানা ধরণে বৃ, ফার্ণ, লতাগুল্ম ও পাম জাতীয় বৃ জšে§। বন না থাকলে পানির উৎস সৃষ্টিকারী এসব উদ্ভিদ না থাকার কারণে ঝরণা/ছড়ার পানি থাকে না। আদিবাসী প্রতিটি প্রামের পাশে যেখানে পানীয় জল আনা হয় সেসব ঝরণা/ছড়ার পাশে বন সংরতি থাকে। পানির উৎস সৃষ্টিকারী বড় বড় বৃরে মধ্যে পাইন্যাতুলি, বান্দরহলা, জারুল, তৈলসুর, চাপালিশ, ধুন্দল, গর্জন বিশেষভাবে উলেখযোগ্য। পাম জাতীয় বৃরে মধ্যে কুরুক পাতা, গোলপাতা, সাংকু, লিপচে, কমসং, তুর ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেযোগ্য। ফার্ণ জাতীয় উদ্ভিদদের মধ্যে লি ইয়া, হাবরু, ঢেকিশাক, রুয়াকক ইত্যাদি। তাছাড় জঙ্গলী বিচি কলাও ঝরণা/ছড়ার পানির উৎস সৃষ্টির পেছনে অসীম অবদান রয়েছে।

জরুরী বা প্রয়োজনীয় মুহুর্তে বনজ দ্রব্য আহরণ ও ব্যবহারের জন্য ঃ

আদিবাসীদের সমাজে জš§, মৃত্যু ও বিবাহ অনুষ্ঠানে বাঁশ একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতিটি আদিবাসীরা জš§দিন পালন করে তাদের রীতি রেওয়াজ অনুসারে। এ জš§দিন পালন করা সময় অনেক আদিবাসী বাঁশের ফুল ব্যবহার করে। বাঁশকে মসৃণভাবে কেটে ফুল তৈরী করে ঘর সাজায়। গ্রামের কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার লাশ সৎকারের জন্য বাঁশ ও গাছ প্রয়োজন। অনেক আদিবাসী তাদের স্বকীয় কারীগরি দতা বাঁশ দিয়ে লাশ রাখার কফিন তৈরী করে। এই কফিন বানানোর জন্য তখন এ সংরক্ষিত বন থেকে বাঁশ আনা হয়। লাশ পোড়ানো জন্য লাকড়ী সংরতি বন আনা হয়। আবার গ্রামের স্কুল ঘর ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করার জন্য সংরতি বন থেকে বনজ দ্রব্য সংগ্রহ করে। গ্রামের কোন বিধাবা, বিপতœী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি থাকলে তাদের গৃহনির্মাণের জন্য কমিটিদের অনুমতি নিয়ে এই সংরতি বন থেকে বাঁশ, গাছ আহরণ করে।

চিকিৎসার জন্য ঃ

চিকিৎসার জন্য আদিবাসীরা সম্পূর্ণ বনের উপর নির্ভরশীল। প্রতিটি আদিবাসীর গ্রামে কেউ না কেউ একজন বৈদ্য/করিবাজ থাকে। গ্রামের রোগ ব্যাধি তিনি চিকিৎসা করে থাকেন। জরুরী মুহুর্তে ব্যবহারের জন্য তখন  বননৌষধী গাছ সংরতি বন থেকে সংগ্রহ করে থাকে। কোন গ্রামে ডায়রিয়া দেখা দিলে তারা সংরতি বন থেকে ডায়রিয়া নিরাময়ের জন্য গাছ গাছড়া সংগ্রহ করে।

খাদ্যের জন্য ঃ

কোন সময় খাদ্যের অভাব হলে বা কোন দূর্দিন দূর্বিপাকে আদিবাসীরা সংরতি বন থেকে খাদ্য সামগ্রী আহরণ করে। জঙ্গলে নানা ধরণের ফলমূল, নানা ধরণের জঙ্গলী আলু তারা সংরতি বন থেকে সংগ্রহ করে খাদ্যের অভাব মেটায়। সংরতি বনে পশু পাখি শিকারের নিষেধ থাকলেও যখন তাদের মাংস প্রয়োজন তখন কমিটির অনুমতি নিয়ে গ্রামের সবাই মিলে সংরতি বনে পশু পাখি শিকার করে। শিকার পেলে গ্রামবাসী নারী- পুরুষ, ছেলে-মেয়ে সকলে মিলে শিকারের মাংস আহার করে। তবে কখনো এককভাবে সংরতি বনে পশু পাখি শিকারের অনুমতি দেওয়া হয় না।

কাপ্র“ পাড়া গ্রামীণ সাধারণ বন ব্যবস্থাপনা ঃ

কাপ্র“ পাড়া বান্দরবান সদর দপ্তর হতে ৪০ কিলোমিটার দণি-পূর্বে চিম্বুক পাহাড়ে লামা উপজেলায় ৫নং সরই ইউনিয়নে অবস্থিত। এটি ম্রো আদিবাসী গ্রাম। গ্রামের মোট ৪৫টি পরিবার এবং লোকসংখ্যা প্রায় ২৮৬ জন। চিম্বুক পাহাড়ের নীলগীড়ি পর্যটনের পাদদেশে এ গ্রামটি অবস্থিত। গ্রামবাসীদের জুমচাষ একমাত্র জীবিকা পথ হলেও গ্রামের আশে পাশে কোন ব্যক্তিকে জুমচাষ করতে দেয়া হয় নাই। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৩০০০ ফুট উচ্চু হলেও গ্রামের চারপাশে সংরতি বন থাকার কারণে খাবার পানি অভাব এখনো অনুভূত হয় নি। তাদের জীবন জীবিকা এখনো বিপন্ন হয়নি। তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তারা ১০০ একর বন সংরণ করে রেখেছে।

কাপ্র“ পাড়াবাসীরা কেন বন রাখে?

১। ঘর বাড়ি নির্মাণের জন্য;

২। আগুন থেকে রার পাওয়ার জন্য;

৩। জন্ম ও মৃত্যুকালে প্রয়োজন হবে বলে;

৪। খাবার পানির সংরণের জন্য;

৫। তরকারী পাওয়ার জন্য;

৬। ঔষধ পাওযার জন্য;

৭। নানা ধরণের ফল খাওয়ার জন্য;

৮। পশু পাখি শিকার করার জন্য;

৯। গৃহের তৈজপত্র বানাবার জন্য;

কিভাবে বন রা করেছে?

১। কাউকে সংরতি বন থেকে বনজদ্রব্য আহরণ করতে দেয় না;

২। বনের চারদিকে আগুন নির্বাপনের ব্যবস্থা করে;

৩। হেডম্যান থেকে চৌহদ্দিমূল্যে অনুমোতি নিয়ে;

৪। অনুমোতি ছাড়া কাউকে বনে ধুকতে দেয় না;

৫। কমিটির মাধ্যমে। কমিটিরা হলেন

(১)        খানদই ম্রো

(২)        খুইলা ম্রো

(৩)        পাতুই ম্রো

(৪)        মেনকেও ম্রো

আদিবাসীদের লোকবিশ্বাস ও পূজা-পার্বন বন সংরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে ঃ

আদিবাসী মাত্রই প্রকৃতি পূজারী। কোন বিপদে-আপদে, রোগ ব্যাধি, মহামারী, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুভি-আকাল দেখা দিলে নদী পূজা, বৃ পূজা, অগ্নি পূজা, পাথরের পূজা, বৃ পূজা ইত্যাদি করে থাকে। আদিবাসীদের এই সব পূজা বন ও পরিবেশ সংরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কাপ্র“ পাড়া লোকেরা যদি পাথর পূজা ও বৃ পূজা না করত তাহলে সেই বৃরাটকায় ৩টি কানচার বৃ থাকত না আর সেই দন্ডায়মা হুয়া ইং (পাথরের ফলক) থাকত না। এতণে ব্যবসায়ীরা তুলে ফেলত। তুইসিং এ ম্রিনা নাত ও মুং পূজা না করলে পানির উৎস শুকিয়ে কাপ্র“ পাড়া লোকেরা পানির জন্য হাহাকার হয়ে যেত। গ্রামটি এখনো টিকে রয়েছে এসব পূজা অর্চনা করার কারণে।

বৃ পূঁজা ঃ

কাপ্র“ পাড়া লোকেরা তাদের সংতি বনে ৩টি কানচাং  গাছকে প্রতিবছর পূজা করে থাকে। গ্রামের কারো ঘরে অসুখ বিসুখ হলে কুকুর, ছাগল, শুকর কতুতর বলি দিয়ে বৃদেবতাকে সন্তোস্ত করে। যে বৃকে পূজা করে সে বৃরে ফল খাওয়া এবং কেটে কাটা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। এমনকি দা দিয়ে বৃরে গায়ে কুপ মারও নিষেধ। পূজা বৃ যদি কেউ কাটে বা তার ফল খেয়ে থাকে তাহলে সে লোকের ঘরে বৃ দেবতার কুনজর পড়ে। ফলে গৃহস্থের লোকজন অসুখ হবে এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। তাই ম্রোরা কখনো পূজার বৃরে ফল খায় না এবং কখনো পূজার বৃ কাটে না। শুধু তাই নয়, পূজার বৃরে আশে পাশে যে কোন গাছ পালাও কাটার নিষেধ।

হুয়া ইয়ং পূজা (পাথর পূজা) ঃ

কাপ্র“ পাড়ার সংরতি বনে একটি দন্ডায়মান হুয়া ইয়োং  পাথরের ফলক রয়েছে। উচ্চতা আনুমনিক ২০ফুট। এটি থুরাই (সৃষ্টিকর্তা) গেঁথে দিয়েছে বলে তাদের বিশ্বাস। এ পাথরে তারা প্রতি বছর জুম কাটার আগে পাঠা, কবুতর বলি দিয়ে পূজা করে। জুম কাটার আগে যদি এ পাথর পূজা না করে তাহলে সেই বছরে ফসল ভাল উৎপাদন হয় না বলে গ্রামবাসীরা জানান। শুধু ফসল নয় সেই বছর রোগের প্রার্দুভাব বেশী দেখা দেয় বলে তারা জানান। পাথর পূজা করলে বহি:শত্র“ আক্রমণ, কলেরা, মহারী, খুনি-ডাকাতি, ঝড়-তুফন, অগ্নি-খড়গ ইত্যাদি হাত থেকে পরিত্রান লাভ করেছে এমন প্রমান পাওয়া গেছে বলে পাড়াবাসীরা জানান।

তুইসিং ম্রিনা নাত: (ঝরণা পূজা) ঃ

কারো পায়ে যখন ঘা হয় বা দাতের অসুখ হয় তখন সাকমা  ঝিড়িতে তুইসিং  অর্থাৎ পানির ফোঁয়ারা দেবতা নজর পড়েছে কাপ্র“ পাড়াবাসীরা মনে করে। তখন তারা কুকুর ও কবুতর বলি দিয়ে তুইসিং দেবতাকে সন্তোষ্ট করে। তুইসিং আশে পাশে জুম কাটা নিষেধ। এমনকি তুইসিং আশে পাশে কোন বৃগুল্ম কাটাও সম্পূর্ণরূপে নিষেধ রয়েছে।

মুং ফু (মুং এর পূজা) ঃ

মুং হল এক প্রকার ঝরণা। ঝরণার ধারে বৃহৎ বৃহৎ পাথর থাকে। আবার পাথরের উপর প্রাকৃতিক লবন জন্মে। পশু পাখি জীবজন্তু এ লবন খেতে আসে। হরিণ ও গয়ালদের প্রিয় খাবার এ মুংএর লবন। শিকারীরা যেখানে মুং থাকে সেখানে শিকার করতে যায়। আবার বাঘের ভয়ও কমতি নেই। জীবন জন্তু শিকার জন্য বাঘেরাও মুং এ আশে পাশে উঁৎপেতে থাকে। কাপ্র“ পাড়া সংরতি বনে লংপ্রোয়া ঝিড়িতে এ ধরণের মুং রয়েছে। যাদের কোন সন্তান সন্তততি নেই তারা পাঠা ছাগল, কবুতর বলি দিয়ে পূজা অর্চনা করে। পূজার শেষে সেখান থেকে একটি শিলা পাথর নিয়ে এসে যে মহিলা সন্তান হয় নাই বা বন্ধা সেই মহিলা সন্তান বলে মনে করে পাথর কুলে নিয়ে ঘুমাবে। যেদিন থেকে পাথর আনা হবে সেদিন থেকেই নয়দিন ধরে সেই মহিলা ‘তা উং’  করবে। তখন ঘরের বাহিরে আসতে পারবে না। কারো সাথে কথা বলতে পারবে না। এমনকি স্বামীর সাথেও নয়। যদি কারো সাথে কথা বলে তাহলে নিরবতার ভেঙ্গে যাবে, তাতে আর সন্তান হবে না। এ সময় সেই মহিলা নিরামিষ ভূজি থাকতে হবে। শুধু পানি ও ভাত খেতে পারবে। কোন শাক সব্জি খাওয়ার পর্যন্ত খেতে পারবে না। নয় দিন পর খুব ভোরে যখন কাক-পীও জেগে উঠে নাই তখন সেই আনীত পাথর পূনরায় মুংএ দিয়ে আসতে হবে। আর সেই দিনই গো হত্যা উৎসব আয়োজন করে গ্রামবাসীকে খাওয়াতে হবে। এভাবে পূজা করে অনেকে সুফল পাওয়া গেছে কাপ্র“ পাড়াবাসীরা জানায়।

যে উদ্ভিদগুলো থেকে আদিবাসীরা উপকার পেয়ে থাকে ঃ

(১) ওয়াইরুই (এক প্রকার লতা) ঃ

গভীর বনভূমিতে এ ধরণের ওয়াইরুই দেখা যায়। গাছে গাছে মালার মত ঝুলে আছে যা গাছকে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে গোলক ধাঁধাঁর মত কুন্ডলী তৈরী করে রেখেছে। এ ধরণের লতা মানুষের বাহুর মত মোটা থাকে। এগুলো কেটে ফেললে ভেতর থেকে পানি বের হয়ে আসে। এই লতাগুলো উচ্চ পাহাড়ে জšে§ যেখানে প্রায় পানি পাওয়া যায় না। সেখানে লতাগুলো তাই খুব কাজে লাগে। জরুরী মুহুর্তে আদিবাসীরা এলতার পানি দিয়ে তৃষ্ণা নিবারণ করে। সবচেয়ে অদ্ভূদ ব্যাপার হল এই লতার কুন্ডলীর এক জায়গায় কেটে ফেলে দুইটি লম্বমান অংশে রেখে দিতে হবে যাতে পানি বের হতে না পারে। এরপর দক্ষতার সাথে পর পর দুইটি আঘাতে লম্বমান অংশ দুটি কেটে ফেললে পানি বের হয়ে আসে। এভাবে এক টুকরা লতা কেটে একটি গামলায় অর্ধেক পরিমাণ পানি পাওয়া যায়। আনাড়ী হাতে ৩/৪ টুকরো কাটলে পানি পাওয়া যায় না। ম্রোরা বলে লতার কান্ড কাটতে না পারলে পানি উপর দিক দিয়ে পালিয়ে যায়।

(২) নাই উই রুই (এক প্রকার লতা) ঃ

এ জাতীয় লতা ঝিড়ি আশে পাশে বড় বড় বৃকে প্যাচিয়ে রাখে। ফল পাকলে বিচি মানুষের কিডনী সাদৃশ্য ধোসরবর্ণে। পাকা অবস্থায় ফলের খোলসের আবরণ অত্যন্ত বিষাক্ত। গায়ের লাগলে সাথে সাথে এলার্জি সৃষ্টি হয়। পত্রপলব সীমের পাতার মত মোটা ও চওড়া। কাটলে রস বেড়িয়ে আসে। এ লতার রস অত্যন্ত কষালো ও তিত্তা মিশ্রিত। কারো ডায়রিয়া হলে এ লতার রস খেলে ডায়রিয়া রোগ নিরাময় হয়।

লাং (এক প্রকার বড় জাতের বেত) ঃ

এ জাতের বেত ম্রো আদিবাসী কাটে না। কাটার নিষেধ রয়েছে। এ জাতের বেত কাটার সময় যদি সোঁ সোঁ আওয়াজ করে তাহলে যে লোকটি লাং কাটবে সেই লোকটি যে কোন দূর্ঘটনা শিকার হয়ে মারা যাবে। এ জাতীয় বেতকে সনলু সনরেং (বেতের রাজা বলে।) এ জাতীয় বেত ছড়ার পাশে মাটির স্যাঁতস্যাঁতে স্থানে জšে§। এ জাতীয় বেত ছড়ার পানির উৎস সৃষ্টির পেছনে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এ ধরণের বেতের ফল পাখিদের প্রিয় খাবার বস্তু।

এই বিভাগের আরো পোস্ট

Tags: 
Subscribe to Comments RSS Feed in this post

3 টি সাড়া পাওয়া গেছে

  1. নন্দ দা,
    আমি সম্পূর্ণ url টি না লিখে “এখানে” শব্দের উপর url টি সংযুক্ত করে দিয়েছিলাম। এখন সব লিখে দিয়েছি। ধন্যবাদ দাদা

Pingbacks/Trackbacks

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*